চুলের জট থেকে মুক্তির উপায় জেনে নিন

 

টিভিতে, সিনেমায় যখন আমরা নায়িকাদের মখমলি কেশরাশির নির্বিঘ্ন উড়ান দেখি, তখন মনে একটু কষ্টই হয়! আহা, উত্তুরে হাওয়ায় চুল অমন ফুরফুরিয়ে উড়লে দেখতে বড়ো ভালো লাগে, চমৎকার ছবিও ওঠে নিঃসন্দেহে। কিন্তু তার পর যে কাকের বাসাটা তৈরি হয়, তার দায় সামলানো বড্ড মুশকিল হয়ে পড়ে না? জট পড়া চুলের মধ্যে দিয়ে চিরুনি চালালেই একগাদা চুল ছিঁড়বে, ভাঙবে, ব্যথা লাগবে। তা ছাড়া অমন টানাটানির ফলে গোড়া আলগা হয়ে পাকাপোক্ত ক্ষতি হয়ে যাওয়াটাও কি কম বিরক্তিকর? কিন্তু এই পরিস্থিতিটা এড়ানোর জন্যই বা কী করা যায়? রুক্মিণীর মতো একঢাল রেশম-মোলায়েম চুলের মালকিন হওয়ার কোনও উপায় আছে কী?

প্রথমেই একটি বিষয় না মেনে উপায় নেই – তা হল চুলের মাথা সবার সমান হয় না। তাই ইচ্ছে করলেই মাথা ভরা চুল গজিয়ে উঠবে না। কিন্তু নিয়মিত যত্ন নিলে যতটুকু আছে, তার স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব। খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন যে রুক্ষ চুলেই জট পড়ে বেশি। তাই প্রথমেই আপনাকে আর্দ্রতার জোগানের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রচুর জল ও তরল পানীয় খান – তা আপনার ত্বক আর চুল দুটোই ভালো রাখবে। শ্যাম্পু করলেই আপনাকে কন্ডিশনার লাগাতে হবে, অন্য কোনও উপায় নেই। তেল লাগাতে হবে সপ্তাহে অন্ততপক্ষে দু’দিন। এমন ঘরোয়া মাস্ক ব্যবহার করতে হবে যা চুলকে নরম, মসৃণ রাখতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে দেখতে হবে খাদ্যতালিকায় যেন যথেষ্ট ফ্যাট আর প্রোটিন থাকে তা দেখবেন। তাতে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। সম্ভব হলে রাতে শোওয়ার সময় চুলটা আলগা করে বেঁধে নিন, তা না হলে বালিশে ঘষা লেগে তার স্বাস্থ্যহানি হবে। খুব ভালো হয় সিল্ক বা স্যাটিনের বালিশের ওয়াড় ব্যবহার করতে পারলে। ভেজা চুলে কখনও শোবেন না। এমনিতেই ভেজা চুল চট করে ভাঙে, তার উপর বালিশে দীর্ঘক্ষণ ঘষা খেলে তার অবস্থা আরও খারাপ হবে। নিয়মিত চুল আঁচড়াবেন এবং ডগার দিকটা রুক্ষ হয়ে গেলে ছেঁটে ফেলবেন সময় করে। আর, অবশ্যই দূরে থাকবেন হিট স্টাইলিং থেকে।

জট পড়া এড়াতে চুলে প্যাক লাগান নিয়মিত। আমন্ড তেল, মধু আর দইয়ের প্যাক সপ্তাহে দু’বার লাগানো উচিত। এক ঘণ্টা রেখে নরম কোনও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। লেবুর রস আর ডিমের কুসুম মিশিয়ে নিয়েও লাগাতে পারেন। মোটা দাঁড়ার চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াবেন। শ্যাম্পু করার পর চুলের দৈর্ঘ্য বরাবর কন্ডিশনার লাগাতে ভুলবেন না। আর, তোয়ালে দিয়ে চুল পেঁচিয়ে মাথার উপর তুলে রাখার অভ্যেস থাকলে অবিলম্বে সেটি ত্যাগ করুন। পুরোনো ও নরম টি শার্ট দিয়ে আলতো হাতে চুলের জল শুকিয়ে নিন। বাতাসে চুল শুকনো করাটা অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।