প্রশ্নের মুখে গ্রামীণ হাসপাতালের নিরাপত্তা
বৃহস্পতিবার,৬ মার্চ ২০২৪, ২০:৩৫ :অভয়া কাণ্ডের পর রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল গুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে কলকাতার বড় বড় সরকারি হাসপাতালে এবং জেলা হাসপাতাল গুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হলেও গ্রামীণ হাসপাতাল গুলিতে কোন নিরাপত্তা রক্ষী নেই বললেই চলে। বুধবার সকালে সাঁকরাইল এর হাজী এসটি মল্লিক গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে এক রোগীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে ফের প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ কল্পিত পাশী(৬৪) নামে এক বৃদ্ধা অসহ্য পেটের যন্ত্রণা নিয়ে একাই ডাক্তার দেখাতে আসছিলেন সাঁকরাইল এর হাজী এসটি মল্লিক গ্রামীন হাসপাতালে। হাসপাতালে গেটের সামনে অসুস্থতা বাড়লে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে হাসপাতালের ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে নিয়ে আসেন। সেখানে চিকিৎসক তাকে ওষুধ এবং ইনজেকশন দেওয়ার পর পর্যবেক্ষণের জন্য একটি বেডে শুইয়ে রাখেন। সারারাত ওই বৃদ্ধা হাসপাতালেই ছিলেন। এরপর তার বাড়ির লোকজন হাসপাতালে ওই বৃদ্ধার সঙ্গে দেখাও করে যান। এরপর গতকাল সকালে ওই বৃদ্ধা হাসপাতাল থেকে একাই বেরিয়ে যান। তার বেরিয়ে যাওয়ার ছবি সিসিটিভি ক্যামেরা বন্দি হয়। এর কিছুক্ষণ বাদে হাসপাতালের গেটের কাছে রাস্তার ধারে তাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। তার ছেলের অভিযোগ রাতে মায়ের চিকিৎসা হাসপাতালে হচ্ছিল। কিভাবে সে হাসপাতালের বাইরে মারা যান ? এই মৃত্যুর জন্য হাসপাতালের কর্মীদের গাফিলতির অভিযোগ করেন। বিজেপির পক্ষ থেকেও হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করা হয়। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রায় বলেন এই ঘটনা প্রমাণ করে এখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
এদিকে বুধবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির এক বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কিভাবে করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। ওই সমিতির চেয়ারপার্সন এবং সাঁকরাইল এর তৃণমূল বিধায়ক প্রিয়া পাল বলেন বড় হাসপাতালে নিরাপত্তা কর্মী থাকলেও ছোট গ্রামীণ হাসপাতালে কোন নিরাপত্তা কর্মী নেই। ফলে ডাক্তার এবং নার্সরা নিরাপত্তা কর্মী ছাড়াই রাতে হাসপাতালে চিকিৎসা করেন। আজকের আলোচনার পর নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তগুলি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরে পাঠানো হবে। এর পাশাপাশি পুলিশকেও অনুরোধ করা হবে যাতে হাসপাতালের নজরদারি বাড়ানো হয়।
গতকালই বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে ডেপুটি সিএমওএইচ এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সদস্যরা গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছেন। ইতিমধ্যেই মঙ্গলবার রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং নার্সদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দিন কয়েকের মধ্যেই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এর কাছে এই রিপোর্ট জমা পড়বে। সেই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে স্বাস্থ্য দপ্তরে।
তবে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর দিকেই কার্যত তাকিয়ে আছেন এলাকার বাসিন্দারা। যাতে এই ধরনের ঘটনার কোন পুনরাবৃত্তি না হয়।
কোন মন্তব্য নেই: